প্রেম এক নিগূঢ় বন্ধন…….

প্রেম এক নিগূঢ় বন্ধন…….

প্রেম এক নিগূঢ় বন্ধন। প্রেমের অনুভূতি পবিত্রতার, গভীরতার, ভালোবাসার। এই তীব্র অনুভূতি প্রকাশ মনের স্বচ্ছতায়, স্পষ্টতায়, সেখানে ধর্ম, বর্ণ, জাত, বয়স, দূরত্ব, রং এমনকি লিঙ্গও গুরুত্বপূর্ণ হয় না। তবুও চিরাচরিত প্রেমের বাইরে অন্য ধরনের প্রেমকে আজও সকলে একটু বাঁকা নজরে দেখে। কিছু সময় আগেও সমাজের একাংশ প্রেমের সম্পর্ককে সহজ চোখে দেখতো না। যার ফলে আজও প্রচলিত ধারার বাইরে কোনো সম্পর্ক গড়ে উঠলে সেই সম্পর্ককে বহু প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হয়। এর মধ্যে উঁচু জাত -নিচু জাত, উচ্চ বর্ণ -নিম্ন বর্ণ এই নিয়ে আজও লড়াই চলে। সভ্যতার এই অগ্রগতির যুগে ‘honour killing’ এর মতো বর্বর ঘটনা ঘটে। রুপোলি পর্দার নায়ক নায়িকাদের মধ্যে যদি অসম বয়সের প্রেম গড়ে ওঠে তাদেরকেও সমাজ তুলোধোনা করতে ছাড়ে না, সেখানে দাঁড়িয়ে সাধারণ এক পুরুষ নারীর কি অবস্থা হতে পারে তা আমরা অতি সহজেই আন্দাজ করতে পারি। আর এই সম্পর্ক যদি সমলিঙ্গ অথবা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মধ্যে গড়ে ওঠে তাহলে তো আর কথাই নেই। সমাজ দূরে থাক, নিজ পরিবারই তাদের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করে। নৈতিকতার ধ্বজাধারীরা সব বসে থাকেন যেন তারাই ঠিক করে দেবেন কার সাথে কে সম্পর্কে লিপ্ত হবে। হ্যাঁ, সমাজ এগোচ্ছে ঠিকই শিক্ষা ও আধুনিতার সুবাদে অনেক পরিবর্তন এসেছে কিন্তু এখনো অনেকটা পথ চলা বাকি। আমাদের নিজেদেরকে জিজ্ঞাসা করতে হবে, জানতে হবে, প্রেম হবার জন্যে সম্পর্কে উপস্থিত দুই ব্যক্তির সম্মতিটা কি যথেষ্ট নয়। তারা যদি একে ওপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়, অনুগত হয় তবে মনে হয় না সম্পর্ক অসম হলেও খুব একটা মাথা ঘামানোর দরকার পড়ে। গতানুগতিক প্রেমও কি সবসময় সফল হয়? হয় না। কারণ দেখা যায় হয়তো সেখানে শ্রদ্ধা, আদর, যত্নর বড় অভাব। সম্পর্কের মাপকাঠি কি হবে তা কখনও সমাজ ঠিক করতে পারে না। সব জঞ্জাল, আড়ষ্টতা আমাদের চিন্তায়, আমাদের ভাবনায়। তাই প্রেমের সার্থকতা নির্ভর করে শুধুমাত্র দুটি মানুষের সদিচ্ছার, ভালোবাসার ওপর। সমাজের নিম্ন রুচির সংস্কারকে তুচ্ছ করে সেই ভালোবাসাই উন্নীত হয় এক উৎকৃষ্ট চেতনায়, স্বীকৃত হয় মনের পবিত্রতায়।