অনেকদিন যাওয়া হয় না বাজারে। তাই আজ সকাল সকাল বাজারের থলে হাতে বেরিয়ে পড়লাম। বাজারে ঢোকার অনেকটা দূর থেকে বেশ একটা তোড়জোড়, যেন যুদ্ধের পূর্বাভাস। আর ঢুকতেই সেই অতি পরিচিত চারিদিকের হৈ চৈ কোলাহল মুহূর্তের মধ্যে আমার অন্তর মহলের উত্তেজনা বাড়িয়ে দিলো। হরেক রকম সবজির মেলা বসেছে শীতের সকালে। বাজারের সব জিনিসের দাম তো ঊর্ধমুখী। কিন্তু কিছু তো কিনে হেঁসেলে পৌঁছে দিতে হবে, নয়তো হাঁড়ি চড়বে না। এগিয়ে গিয়ে দরদাম করার পর মনে হলো কোনটা নিলে পকেটে চাপ পড়বে না। আলু, পেঁয়াজ, কপি, শিম, আদা, টমেটো কেউ কাওকে এক চুল জায়গা ছাড়তে নারাজ। দামের ঊর্ধমুখীতা এবার ধীরে ধীরে ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এই প্রবাদটিকে একেবারে মিথ্যে প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। তবুও সকালের বাজার যেন এক ঔষধির মতো যা মন ভালো করে দেয়। বিবিধ মানুষের আনাগোনা, তাদের সঙ্গে খানিক গল্প, চায়ের ভাঁড়ে চুমুক আর তর্কের মাদকতায় আচ্ছাদিত ভিড়। দোকানির এক গাল হাসি দিয়ে ‘কেমন আছেন বাবু’ কথাগুলো আত্মিক টান অনুভব করায়। গড়ে ওঠে অন্তরের সম্পর্ক। ভাগ করে নেওয়া হয় সুখ দুঃখের অনুভূতি। তাই বাজারের আবেদন চিরকালীন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি কখনোই মুছে যাবার নয়।
কিন্তু যাই হোক, এই অনলাইন মার্কেটিং এর সময়ে কিন্তু বাজারে এসে খোদ বিক্রেতার সাথে দরদাম করে কেনার মজাটাই আলাদা। পুরোনো বিক্রেতার সাথে একটা কেমন সুসম্পর্ক স্থাপন করা যায়। আবার পরিচিত কারুর সাথে দেখা হওয়া, দাঁড়িয়ে দুদণ্ড কথা বলা, সেও মন্দ নয়। এছাড়া ঘুরে ঘুরে বাজার, রকমারি আবিষ্কার করা সেও বেশ আত্মতৃপ্তি ঘটায়।