রবিবার থেকে কাতারে শুরু হলো ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২। এই মহাযজ্ঞে সামিল হবে গোটা বিশ্ব। বাঙালীও বুঁদ হয়ে রয়েছে ফুটবলের নেশায়। আর বাঙালীর ফুটবল প্রেম ও আবেগ, অজানা নয়। তাই হয়তো বলা হয় ‘সব খেলার সেরা বাঙালীর তুমি ফুটবল’। অথচ ফুটবল আমাদের নিজস্ব খেলার তালিকায় ছিল না। ধীরে ধীরে এই খেলা বাঙালি পরিচিতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, বিংশ শতকে বাংলা সাহিত্যে খেলার প্রসঙ্গ মানেই ছিল ফুটবল। রবীন্দ্রসাহিত্যে প্রথম ফুটবলের উল্লেখ পাওয়া যায় ‘প্রজাপতির নির্বন্ধ’ উপন্যাসে। ‘সহজ পাঠ’, ‘পুনশ্চ’ কাব্যগ্রন্থ, ‘বর্তমান যুগ’ প্রবন্ধ প্রায় সর্বত্রই ফুটবলের উল্লেখ করেছেন তিনি। শরৎচন্দ্রের কালজয়ী উপন্যাস ‘শ্রীকান্ত ‘ এ বাঙালি ও মুসলমান ছাত্রদের মধ্যে ফুটবল ম্যাচের বর্ণনা পাওয়া যায়। বিদ্রোহী কবি নজরুলের ছিল চরম ফুটবলের নেশা। শুধু ভালোবাসা নয়, ফুটবলকে লেখাতেও স্থান দিয়েছেন তিনি। বিবেকানন্দের মতো বীর সন্ন্যাসী দুর্বল ভারতবাসীকে বলবান করার জন্য গীতা পাঠের চেয়ে ফুটবল খেলার দিকে বেশি মন দিতে বলেছেন। ১৯১১ সালে মোহনবাগানের জয় এতটাই গভীর প্রভাব ফেলেছিল যে তা নিয়ে করুণানিধান বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা লেখেন। বাঙালীর ফুটবল প্রেম রীতিমতো গবেষণার বিষয় হতে পারে এবং সাহিত্যে ফুটবলের বারংবার অবতারণা যে মোটেও অপ্রাসঙ্গিক নয় তা নিঃসন্দেহে বলা যেতেই পারে।