শৈশবহীন বাগিচা

শৈশবহীন বাগিচা

শিশুরাই হলো দেশের ভবিষ্যৎ। তারাই আমাদের আশার প্রদীপ। আজ ১৪ই নভেম্বর সাড়া দেশে জুড়ে পালিত হচ্ছে শিশু দিবস। এই বিশেষ দিনে তাদের সুরক্ষা, অধিকার, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সকলকে সচেতন করা হলো অন্যতম উদেশ্য। কিন্তু আজও বহু শিশু মৌলিক অধিকার তো দূরে থাক, সামান্য নাগরিক অধিকারগুলো থেকেও বঞ্চিত। চা বাগানের শিশুরা এর জ্বলন্ত উদাহরণ। তাদের শৈশব কাটে মনোরম চা বাগানের অন্ধকারময় বাস্তবে। চরম দারিদ্র ও তীব্র ক্ষুধার কামড় তাদের বাধ্য করে স্লেট পেন্সিলের পরিবর্তে চা পাতা তুলতে, বাবা-মার সঙ্গে চা বাগানে দিনমজুরী করতে। তার স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, আশ্রয়, পানীয় জল, পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা, চিকিৎসা, পর্যাপ্ত মজুরি, সামাজিক মর্যাদা থেকে প্রতারিত। এরকম পরিস্থিতে শিক্ষা তাদের কাছে দুর্লভ বস্তুতে পরিণত হয়েছে। অন্যান্য চা শ্রমিকদের মতো তারাও কঠোর পরিশ্রম করে, অনেক শিশু বা কিশোর-কিশোরী আবার আদর-যত্নের অভাবে বিভিন্ন রোগ ব্যাধির দ্বারা আক্রান্ত হয়। চা মৌসমে এই চিত্র আরো ভয়াবহ। অন্যান্যদের মতো স্কুল যাওয়া, সহপাঠীদের সাথে খেলাধুলো, নতুন জামা-জুতো, প্রিয় খাবার, খেলনা এদের কাছে নিতান্ত অলীক কল্পনা। এই কর্মকান্ড নিষ্ঠুর হলেও চা বাগানের ক্ষেত্রে এটা নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু এই অবস্থার পরিবর্তন দরকার। চা বাগানের শিশুদের উন্নত জীবন ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষার সবরকম দায়িত্ব নিতে হবে চা বাগানের মালিকদের এবং সরকারকেও। চা শ্রমিকদেরকেও তাদের অধিকার সম্বন্ধে সচেতন হতে হবে। নয়তো আগামীর ফুলেরা প্রস্ফুটিত হবার আগে কুঁড়িতেই বিনষ্ট হবে।