জীবনের প্রতিটা পদে তারা অসাম্যের শিকার, প্রান্তিক সম্প্রদায়ভুক্ত। এই বিচ্ছিন্নতাবাদকে কাটিয়ে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তিকরণই হলো তাদের চিরন্তন লড়াইয়ের সাফল্য। আর একটু একটু করে তারই দিকে অগ্রসর হওয়া। উল্লেখ্য, মেম্বার অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সজেন্ডার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের প্রাক্তন সদস্য এবং রূপান্তরকামী আন্দোলনের এক বিশিষ্ট মুখ রঞ্জিতা সিনহা প্রচলিত রীতিনীতিকে সরিয়ে দুর্গাপূজার আয়োজন করে চলেছেন। অর্ধনারীশ্বর রূপে দুর্গার আরাধনার মধ্য দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব খুঁজে পান তিনি ও তার তৃতীয় লিঙ্গভুক্ত পরিবারের সদস্যরা। সমাজের বাঁকা নজরকে উপেক্ষা করে নিজেদের মতো আনন্দ ভাগ করে নেন। এমনকি দশমীর দিনে দুই কানাডায়ান গবেষক যারা এই রূপান্তরকামী মানুষদের বিষয়ে গবেষণা করতে তাঁদের পূজায় উপস্থিত হয়েছিলেন, তাঁদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন স্বয়ং রঞ্জিতা সিনহা। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এটা তাঁদের এক বড় জয়যাত্রা। মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়িতা মন্ডল, প্রীতিকা যশিনী, জিয়া দাস, শবনম মৌসীর মতো উজ্জ্বল নক্ষত্ররা তাঁদের উত্থানের দ্বারা রূপান্তরকামীদের মূলস্রোতে অন্তর্ভুক্ত ঘটাতে খানিক সক্ষম হলেও আমাদের সমাজ আজও সংকীর্ণ মানসিকতার বেড়াজালে আবদ্ধ। তবে সামাজিক অভিশাপ এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা আজও অন্ধকারাছন্ন করে রাখলেও, আশার আলো কিন্তু দীপ্তিময়।