নারী- পুরুষের মতো তৃতীয় লিঙ্গ প্রকৃতিরই সৃষ্টি। কিন্তু সমাজ এমনকি নিজ পরিবারের কাছে তারা অবাঞ্ছিত। সমাজ ব্যবস্থার একটা বিচ্ছিন্ন অংশ হিসাবে তাদের ভাবা হয়, তাই তারা গড়ে তোলে তাদের নিজস্ব পরিবার ও সমাজ। শুধুমাত্র অনুন্নত দেশগুলোতে নয় বরং উন্নত দেশগুলোতেও তারা সর্বপ্রকার নূন্যতম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। শিক্ষা, চাকরি সর্বক্ষেত্রেই তারা অবহেলিত। বেঁচে থাকার তাগিদে অনেক সময় ভিক্ষাবৃত্তি বা যৌনকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। আর এই অবহেলার সূচনা হয় তাদের নিজের পরিবার থেকেই। পরিবারের সদস্যরা তাদের শারীরিক ও মানসিক ভিন্নতা কোনো ভাবে মেনে নিতে পারে না, ফলে শুরু হয় অবজ্ঞা অবহেলা নির্যাতন। এর পিছনে একটা বড়ো কারণ হলো সামাজিক চাপ। থাকে একঘরে হয়ে যাবার ভয়। তাই প্রাথমিকভাবে পরিবারের তরফ থেকে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করা হয়, নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করার জন্য অনেক সময় সদস্যটিকে পরিবার থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়। তার জীবনধারণ হয়ে পড়ে আরো কঠিন । যেখানে সুপ্রিম কোর্টও এদেরকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসাবে মর্যাদা দিয়েছে এবং সুযোগ সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে সেখানে পরিবারের এহেন আচরণ অযৌক্তিক। বর্তমানে শিক্ষা, চাকরি সর্বক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা নিজেদের বিজয়পতাকা তুলে ধরেছেন। তবে এই পথ পেরোতে তাদের দিতে হয়েছে কঠিন অগ্নিপরীক্ষা। তাই সবার আগে যদি পরিবার থেকে সমর্থন আরেকটু বেশি পাওয়া যায় তাহলে হয়তো এদের জীবনের চলার পথ কিছুটা মসৃণ হতে পারে।