বাজলো তোমার আলোর বেণু……….

বাজলো তোমার আলোর বেণু……….

‘বাজলো তোমার আলোর বেণু
মাতলো রে ভুবন’
মহালয়ার শুভক্ষণ, সত্যি আবেগতাড়িত হবারই কথা! কাকভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে চন্ডি পাঠ শুনলে বাঙালি মন আবেগে, স্মৃতি রোমন্থনে অনুরণিত হয়ে ওঠে। বাস্তবে মহালয়ার মূল তাৎপর্য হলো এটি পিতৃপক্ষের শেষ দিন ও মাতৃপক্ষের সূচনা দিবস। সনাতন হিন্দু ধর্ম অনুসারে, এদিন প্রয়াত আত্মার মর্ত্যলোকে যে সমাবেশ ঘটে তাকে মহালয় বলে। সেখান থেকেই’মহালয়া’ কথাটির উৎপত্তি। অর্থাৎ দেহ বিলীন হলেও আত্মা যে অবিনশ্বর সেই বার্তা দেওয়া হয় তর্পণ দানের মাধ্যমে। এছাড়া তর্পণ মন্ত্রে ‘পিতৃ’ বলতে জনক-জননী উভয়কেই বোঝানো হয়েছে অর্থাৎ এখানে সাম্যবাদের কথা বলা হয়েছে।
মহালয়ার আর একটি তাৎপর্য হলো এই দিনটি দেবীপক্ষের সূচনাকাল। দেবী বন্দনার মধ্যে দিয়ে মহামায়া দেবী দুর্গাকে আহ্বান জানানো হয়, যিনি নারীশক্তির প্রতীক। তিনিই এই জগৎ সৃষ্টি করেন, পালন করেন, আবার প্রলয়কালে সংহার করেন। মহামায়ার বন্দনার মধ্য দিয়ে জগতের সকল নারীশক্তিকে বন্দিত করাই এই পুজোর মূল উদ্দেশ্য। প্রতিটি নারীর মধ্যেই রয়েছে আদ্যাশক্তির অংশ। তারাও দেবীর মতো দশভূজা হয়ে সকল দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তাদের মধ্যেও রয়েছে ধারণ, পালন ও প্রতিরোধের ক্ষমতা।
তাই মহালয়ার এই দিব্য আলোয় মহাশক্তি দুর্গতিনাশিনীকে আহ্বান জানাই, যেন বিভেদ, বিবাদ, সংকীর্ণতার ঊর্ধে উঠে আমাদের অন্তরের আত্মশক্তিকে আরো উন্নত করতে পারি।